এতেকাফরত এড. মাওলানা শাহিনুর পাশা চৌধুরীকে গ্রেফতার করে ইসলামপন্থীদের দমনে সরকার নির্মম মূর্তি ধারণের বহি:প্রকাশ ঘটালো
– ইসলামী আন্দোলন নেতা গাজী আতাউর রহমান
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান মসজিদে এতেকাফরত অবস্থায় হেফাজত নেতা ও জমিয়তে ওলামায়ে ইসলামের সিনিয়র কেন্দ্রীয় নেতা মাওলানা এডভোকেট শাহিনুর পাশা চৌধুরীর গ্রেফতারের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন।
ফেসবুকে তাঁর নিজ আইডিতে শনিবার (০৮ মে’২১) মধ্যরাত ৩ ঘটিকায় দেয়া এক স্টাটাস এ তিনি লিখেছেন, “প্রত্যেক নিরপরাধ মানুষের গ্রেফতার এবং হয়রানীই নিন্দনীয়; কিন্তু কিছু বিষয় ধর্মপ্রাণ মানুষের অন্তরে চরম আঘাত করে। একজন মানুষ যখন পবিত্র মসজিদে এতেকাফে বসেন, তখন তিনি একমাত্র আল্লাহর ধ্যান খেয়াল ছাড়া দুনিয়ার সবকিছু থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যান। তিনি তখন আল্লাহর ঘরে আল্লাহর মেহমান হয়ে যান।
এ অবস্থায় একজন মানুষকে গ্রেফতার করাটা চরম পর্যায়ের বাড়াবাড়ি। তাঁকে যদি গ্রেফতার করাটা এতোই প্রয়োজন হতো, তাহলে তিনিতো পালিয়ে যাননি। প্রশাসন কয়েকটা দিন অপেক্ষা করতে পারতো। শাওয়ালের চাঁদ উঠলে গ্রেফতার করতে পারতো। প্রয়োজনে তাঁকে কয়েকটা দিন মসজিদেই নজরদারীতে রাখা যেত। এঘটনার মধ্য দিয়ে প্রশাসনের একটি অংশ যে আলেমদের প্রতি এবং ইসলামপন্থী নেতাদের প্রতি কতোটা নির্মম মূর্তি ধারণ করেছে, তারই বহি:প্রকাশ ঘটলো।
শাহিনুর পাশা চৌধুরি এবং আমি একই সময় ছাত্র রাজনীতি করেছি। আমি যখন ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সভাপতি পাশা ভাই তখন ছাত্র জমিয়তের কেন্দ্রীয় সেক্রেটারী। সারাদেশে চলমান গ্রেফতার অভিযানে এমনও কিছু নিরীহ আলেম গ্রেফতার হচ্ছেন, যাদের হেফাজতের সঙ্গেও কোন সম্পৃক্ততা নেই এমনকি অন্য কোন ইসলামী দলের সঙ্গেও কোন সম্পৃক্ততা নেই। জানা অজানা সারাদেশে এমন অনেকেই আছেন।
মোমেনশাহীতে আমার একজন ক্লাসমিট গ্রেফতার হয়েছেন; মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম। মোমেনশাহী নিউ মার্কেট মসজিদের খতিব এবং কয়েকটা মাদরাসার শায়খুল হাদিস। তিনি ছাত্র জীবন থেকেই কোন সংগঠনের সঙ্গে জড়িত নন। খুবই মেধাবী এবং বুজুর্গ আলেম। যাত্রাবাড়ী মাদরাসায় দাওরার ক্লাসে তিনি আকর্ষণীয়ভাবে হাদিসের এবারত পড়তেন। তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। কারণ, তিনি ইত্তিহাদুল ওলামা মোমেনশাহী জেলা সভাপতি। যেটি নিছক আলেমদের একটি আঞ্চলিক সংগঠন। তেমনই সুপরিচিত আলেম আতাউল করীম মাকসুদ ভাইও কোন সংগঠনের সঙ্গে জড়িত নন। তাকে কেন গ্রেফতার করা হলো, তাও বোধগম্য নয়! সারাদেশে চলমান গ্রেফতার অভিযানে ইসলামী আন্দোলন এবং এর সহযোগী সংগঠনসমূহেরও এ পর্যন্ত ২৭ জন নেতা কর্মী গ্রেফতার হয়েছেন। এ নিয়ে আমরা বিচলিত নই। কারণ, এদেশের রাজনৈতিক কর্মীদেরকে বিনা অপরাধে চোর ডাকাত আর ক্রিমিনালের মতো কারা ভোগ করতে হয়, এটা এদেশের দূষিত রাজনীতির কালচার।”