৫৫/বি (৩য় তলা), পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০

ফোন : ০২-৯৫৬৭১৩০, ফ্যাক্স : ০২-৭১৬১০৮০

কর্তৃত্ববাদী অবৈধ স্বৈরাচারী সরকারের পতন ঘটাতে জনগণকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে- আলোচনা সভায় পীর সাহেব চরমোনাই

  • হোম
  • জাতীয় কর্মসূচি
  • কর্তৃত্ববাদী অবৈধ স্বৈরাচারী সরকারের পতন ঘটাতে জনগণকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে- আলোচনা সভায় পীর সাহেব চরমোনাই

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ- এর আমীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম পীর সাহেব চরমোনাই বলেছেন, দেশে কর্তৃত্ববাদী শাসন চলছে। সরকার জনগণের ভোটাধিকার ও নাগরিকঅধিকার কেড়ে নিয়েছে। নীতি ও নৈতিকতা ধ্বংস করে দিয়েছে। বিদেশীদের হস্তক্ষেপের সুযোগ করে দিয়েছে। বিদেশীদের প্রেসক্রিপশনে দেশ চালাচ্ছে। দেশের মানুষ নানা সঙ্কট ভোগকরছে। নিত্যপণ্যের সীমাহীন মূল্যবৃদ্ধিতে জনজীবন দূর্বিষহ করে তুলেছে।

পীর সাহেব চরমোনাই বলেন রাতের ভোটের অবৈধ সরকারের পতন ঘটিয়ে একটি কল্যাণরাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় জনগণকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। রাজনীতির মাঠক্রমেই উত্তপ্ত হয়ে উঠছে। সঙ্কট আরো ঘুণি ভূত হচ্ছে। তিনি বলেন,দলীয় সরকারের অধীনে কোনও নির্বাচন সুষ্ঠু হওয়ার ইতিহাস নেই। পীর সাহেব বলেন, নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতি নিয়েও বিতর্ক আছে, ‘আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন দলীয় সরকারের অধীনে আয়োজনের পাঁয়তারা চলছে। মানুষকে ধোকাদিয়ে বোকা বানানোর চেষ্টা করা হলে দেশবাসী প্রতিরোধ গড়ে তুলবে।

আলোচনা সভায় ১৫ জুলাই শনিবার রাজধানীর ঢাকায়  সমাবেশ, ১৬ জুলাই থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত সারাদেশে থানায় থানায় তৃণমূল প্রতিনিধি সম্মেলন, সেপ্টেম্বর মাসব্যাপী সকল জেলা ও মহানগরে সমাবেশ কর্মসূচি ঘোষণা করেন পীর সাহেব চরমোনাই।

গত ৮ জুলাই শনিবার বিকেলে পুরানা পল্টনস্থ আইএবি মিলনায়তনে অথর্ব প্রধান নির্বাচন কমিশনের পদত্যাগ ও ব্যর্থ নির্বাচন কমিশন বাতিল সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন (চজ) পদ্ধতির প্রবর্তন বিদ্যমান রাজনৈতিক সংকট উত্তরনে সংসদ ভেঙ্গে দিয়ে জাতীয় সরকারের অধীনে একটি সুষ্ঠু নিরপেক্ষ জাতীয় নির্বাচনের দাবীতে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

এতে বক্তব্য রাখেন, ইসলামী আন্দোলনের মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য প্রিন্সিপাল মাওলানা সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল-মাদানী, আলহাজ্ব খন্দকার গোলাম মাওলা, অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন, অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান ও ইঞ্জিনিয়ার আশরাফুল আলাম, সহকারি মহাসচিব মাওলানা ইমতিয়াজ আলম ও কৃষিবিদ আফতাবউদ্দিন, কেএম আতিকুর রহমান, মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ূম, ইসলামী শ্রমিক আন্দোলনের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আলহাজ্ব আব্দুর রহমান, ইসলামী মুক্তিযোদ্ধা পরিষদের সদস্য সচিব মুক্তিযোদ্ধা আবুল কাশেম, ইসলামী আইনজীবী পরিষদের সিনিয়র সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট শওকত আলী হাওলাদার, জাতীয় শিক্ষক ফোরামের সভাপতি অধ্যাপক নাসির উদ্দিন খান, ইসলামী যুব আন্দোলনের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি প্রকৌশলী আতিকুর রহমান মুজাহিদ, ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সভাপতি ছাত্রনেতা শরিফুল ইসলাম রিয়াদ। উপস্থিত ছিলেন মাওলানা এবিএম জাকারিয়া, মাওলানা খলিলুররহমান, জিএম রুহুল আমিন, মাওলানা নূরুল ইসলাম আল আমিন সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।

পীর সাহেব চরমোনাই আরও বলেন, দেশকে বিদেশীদের হস্তক্ষেপের সুযোগ করে দিয়েছে সরকার। ফলে সাম্রাজ্যবাদী ও আধিপত্যবাদী গোষ্ঠী দেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে নাক গলানোর সুযোগ পাচ্ছে। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ গণমানুষের একটি সংগঠন, জনগণের ভালবাসা নিয়ে দেশে একটি কল্যাণরাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে রাজনীতিতে আদর্শিক ও গুণগত পরিবর্ত আনতে চায়। তিনি বলেন, বিদ্যামান সঙ্কট নিরসনে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন প্রয়োজন। জাতীয় সরকার ছাড়া গ্রহণযোগ্য নির্বাচন সম্ভব নয়। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দেশে রাজনৈতিক সংকট ঘনিভূত হচ্ছে। যা দেশের জনগণের জন্য অমঙ্গল বয়ে আনতে পারে এবং দেশে বিপর্যয় সৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

তিনি বলেন, ‘স্বাধীনতার পর দলীয় সরকারের অধীনে কোনও নির্বাচনই সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য ও নিরপেক্ষ হয় নাই। রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে বিরোধী দলেরওপর দমনপীড়ন চালিয়ে এক তরফা নির্বাচন করে ক্ষমতা দখল করাই দলীয় সরকারের মূল উদ্দেশ্য থাকে। ভবিষ্যতেও দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন সুষ্ঠু হওয়ার আশা করা যায়না। ১৯৭৩, ২০১৪ এবং ২০১৮ সালের নির্বাচন তার প্রমাণ।

চরমোনাই পীর বলেন, ‘রাজনৈতিক একটি বিশেষ প্রেক্ষাপটে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে প্রথম নির্বাচন হয় ১৯৯১ সালে। ওই নির্বাচনে বিএনপি ক্ষমতায় গেলে তৎকালীন বিরোধী দল বলেছিল নির্বাচনে সূক্ষ্ম কারচুপি হয়েছে। এ অজুহাতে বিরোধীদল অনেকদিন পার্লামেন্ট বর্জন করেছিল। আবার দ্বিতীয়বার ১৯৯৬ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনে আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় গেলে ওই সময়ের বিরোধী দল বলেছিল, ভোটে স্থূল কারচুপি হয়েছে এবং তারাও লাগাতার সংসদ বর্জন করেছিল। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনও সবার কাছে গ্রহণযোগ্য হয় নাই।

মাওলানা মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল-মাদানী বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার পুরোমিথ্যার উপর প্রতিষ্ঠা। ৫ সিটির মেয়রদের শপথ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, আওয়ামী লীগের আমলে সবচেয়ে সুন্দর ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হয়। এধরনের মিথ্যা যদি দেশের প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাহলে বুঝা যায় দেশের অবস্থা কোন পর্যায়ে। তিনি এক দফার আন্দোলনে সকলকে শরিক হওয়ার আহ্বান জানান। তিনিবলেন, সোজা আঙ্গুলে ঘি উঠবেনা, আঙ্গুল বাঁকা করতে হবে। সে জন্য আন্দোলন কঠিন থেকে কঠিনতর করতে হবে।

মাওলানা ইউনুছ আহমাদ জাতীয় সরকারের রূপরেখা প্রসঙ্গে বলেন, ‘আপিল বিভাগের একজন বিজ্ঞ, সৎ যোগ্য ও গ্রহণযোগ্য বিচারপতিকে প্রধান করে নিবন্ধিত দলগুলোর প্রতিনিধি নিয়ে জাতীয় সরকার গঠন হবে। যারা জাতীয় সরকারে থাকবেন তারা জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবেন না। জাতীয় সংসদের মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার আগেই জাতীয় সরকার গঠন করতে হবে। জাতীয় সরকার গঠিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই বর্তমান জাতীয় সংসদ ভেঙে দিতে হবে। সংসদ ভেঙে দেওয়ার পাশাপাশি বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনকালীন জাতীয় সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করবেন। জাতীয় সরকার গঠিত হওয়ার পরবর্তী তিন মাসের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন আয়োজন করবেন। কোন কারণে তা সম্ভব না হলে পরবর্তী তিন মাসের মধ্যে অবশ্যই নির্বাচন দিয়ে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে। জাতীয় সরকার গঠিত হওয়ার পর নির্বাচন কমিশন ভেঙে দিয়ে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করতে হবে। বর্তমান মন্ত্রি সভার কেউ নির্বাচনকালীন জাতীয় সরকারে থাকতে পারবেন না।

শেয়ার করুন

অন্যান্য জাতীয় কর্মসূচি

Scroll to Top

সদস্য ফরম

নিচের ফরমটি পূরণ করে প্রাথমিক সদস্য হোন

small_c_popup.png

প্রশ্ন করার জন্য নিচের ফরমটি পূরণ করে পাঠিয়ে দিন