৫৫/বি (৩য় তলা), পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০

ফোন : ০২-৯৫৬৭১৩০, ফ্যাক্স : ০২-৭১৬১০৮০

কুরআন অবমাননাকারীদের কঠোর শাস্তি দিতে হবে

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর প্রেসিডিয়াম সদস্য প্রিন্সিপাল সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল-মাদানী বলেছেন, কুমিল্লায় পূজামণ্ডপে মূর্তির পায়ের নিচে পবিত্র কুরআন রেখে যারা ঘোলাপানিতে মাছ শিকার করতে চায় তাদের খুঁজে বের করে কঠোর শাস্তির আওতায় আনা সরকারের দায়িত্ব। কিন্তু তা না করে প্রধানমন্ত্রী নিজে আগেই একটি পক্ষ অবলম্বন করে বিবৃতি দিয়ে দোষীদের আড়াল করার প্রবণতা লক্ষ্য করছি। কুরআন অবমাননার কারণে বিশ্বের দু’শ কোটি মানুষের হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হচ্ছে।

তিনি বলেন, উগ্র সম্প্রদায়ের কেউ দেশে ধর্মীয় দাঙ্গা-হাঙ্গামা বাঁধানোর চক্রান্ত করতে তা করে থাকতে পারে। বিরানব্বই ভাগ মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায় যে নিরাপত্তা ও অতিমাত্রায় নাগরিক সুবিধা ভোগ করছে বিশ্বে এমন দৃষ্টান্ত নজিরবিহীন। সরকারের কতিপয় এমপি-মন্ত্রীর বক্তব্য দেশে নতুন সঙ্কট সৃষ্টি করছে। দেশের সম্প্রীতি বিনষ্ট করছে। সরকারের পাগল মন্ত্রী ড. মুরাদ হাসান ৭২-এর সংবিধানে ফিরে গিয়ে রাষ্ট্রধর্ম তুলে দিবে এমন বক্তব্য সংবিধানের পরিপন্থি। সংবিধান লঙ্ঘণের দায়ে মন্ত্রী মুরাদ হাসানকে বহিস্কার করতে হবে।

১৬ অক্টোবর ২০২১ শনিবার, বিকেলে ‘কুমিল্লায় পবিত্র কুরআন অবমাননাকারীদের বিচার এবং দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণ’-এর দাবিতে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের উদ্যোগে বায়তুল মোকাররম উত্তর গেইটে বিক্ষোভ মিছিল পূর্ব সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ঢাকা মহানগর উত্তর সভাপতি অধ্যক্ষ মাওলানা শেখ ফজলে বারী মাসউদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সভাপতি মাওলানা ইমতিয়াজ আলম, মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ূম, মাওলানা লোকসমান হোসাইন জাফরী, মাওলানা নেছার উদ্দিন, ছাত্রনেতা শরীফুল ইসলাম রিয়াদ, মাওলানা আরিফুল ইসলাম, ডা. শহিদুল ইসলাম প্রমুখ।

প্রিন্সিপাল মাদানী নিত্যপয়োজনীয় দ্রব্যমূলের লাগামহীন উর্ধ্বগতির প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, কোনো প্রকার কারণ ছাড়াই বারবার নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের লাগামহীন মূল্যবৃদ্ধির কারণে জনজীবন চরম দূর্বিষহ হয়ে উঠছে। সরকার সিন্ডিকেটের কাছে মাথানত করেছে। তিনি অবিলম্বে দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণ করার দাবি জানান। তিনি ব্যর্থ মন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করেন।

প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান বলেন, ঘোলাপানিতে মাছ শিকারের চেষ্টা করা হবে, জনগণ প্রতিবাদ করবে না; তা হতে পারে না। কুরআনের অবমাননা করলে কাউকে ছেড়ে দেয়া হবে না। দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, লজ্জা থাকলে বাণিজ্যমন্ত্রী বহু আগেই পদত্যাগ করা উচিত ছিলো। জনগণের সাথে মন্ত্রীদের কোন সম্পর্ক নেই বলেই বারবার জিনিসপত্রের দাম বাড়ানো হচ্ছে।

যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান বলেন, দেশ ভয়ঙ্কর ষড়যন্ত্রের মুখে। স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব হুমকির মধ্যে। মানুষের জানমাল ইজ্জত আব্রু রক্ষার দায়িত্ব সরকারের। কুমিল্লায় প্রশাসনের নিরাপত্তা বেস্টনী ভেদ করে কিভাবে কুরআন অবমাননা করা হলো? এতে বুঝা যায় দেশ সরকারের নিয়ন্ত্রণে নেই। সরকারের ব্যর্থতার কারণে মন্দিরে হামলা-ভাঙচুর হয়েছে। ভোলায় আল্লাহ রাসূল সা. অবমাননার প্রতিবাদে মিছিলেও গুলি করে ৪/৫ জনকে শহিদ করা হয়েছে। ভোলা পুজা কমিটির সাধারণ সম্পাদক গৌরাঙ্গ রাসূল সা.-কে অবমাননা করে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছে। গৌরাঙ্গ আওয়ামী লীগের জেলা প্রচার সম্পাদক। কোনো ইসলামপন্থিরা মন্দিরে বা পুজায় হামলা করতে পারে না। মন্দিরে বা পুজা মণ্ডপে হামলাকারীরা ক্ষমতাসীন দলের দুর্নীতিবাজ ও লুটপাটকারী।

মাওলানা ইমতিয়াজ আলম বলেন, কুমিল্লায় কুরআন অবমাননার সাথে জড়িতদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। কুরআন অবমাননার প্রতিবাদে ঈমানী মিছিলে পুলিশের গুলিতে নিহত ও আহতদের পরিবারকে যথাযথ ক্ষপিুরণ দিতে হবে। ধর্ম অবমাননার শাস্তির আইন প্রণয়ন করতে হবে। গ্রেফতারকৃতদের অবিলম্বে মুক্তি দিতে হবে। নিত্যপণ্যের দাম কমিয়ে শ্রমিকসহ সকল মানুষের ক্রয় ক্ষমতায় আনতে হবে। এমপি-মন্ত্রীদের উস্কানীমূলক বক্তব্য প্রত্যাহার করতে হবে।

সভাপতির বক্তব্যে শেখ ফজলে বারী মাসউদ বলেন, কুরআন অবমাননা নিয়ে তথ্য মন্ত্রীর বক্তব্য নেই। উল্টো কুরআন ও ইসলামের বিরুদ্ধে বক্তব্য দিয়ে সরকারকে জনগণের মুখোমুখি দাঁড় করানোর চেষ্টা করছে। রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম একটি মীমাংসিত বিষয় এ নিয়ে নতুন করে চক্রান্তের সুযোগ নেই। যে বা যারা রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম নিয়ে চক্রান্ত করবে, সেই চক্রান্ত মুসলমানরা রুঁখে দেবে।

সমাবেশ শেষে একটি বিশাল মিছিল বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেইট, পল্টন মোড় ও বিজয়নগর মোড়ে পৌঁছলে মিছিলের গতি রোধ করা হয়। পরে নেতৃবৃন্দ সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দিয়ে ও মুনাজাতের মাধ্যমে সমাপ্তি ঘোষণা করেন।

শেয়ার করুন

অন্যান্য জাতীয় কর্মসূচি