ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম, পীর সাহেব চরমোনাই আজ ২৬ মে সোমবার এক বিবৃতিতে বলেছেন, সচিবালয় হলো রাষ্ট্রের প্রাণকেন্দ্র। রাষ্ট্রের চরম ও চুড়ান্ত মুহুর্তেও সচিবালয় সচল রাখতে হয়। সেখানে সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫ নিয়ে সচিবালয়ে যে ধরণের অবরোধ ও অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে তা দেশের জন্য অশনি সংকেত। বাংলাদেশ যখন একটি ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে, যখন দেশ একটি সামগ্রিক সংস্কারের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে তখন সচিবালয়ে এই ধরণের অচলাবস্থা পতিত স্বৈরাচারকে সুযোগ করে দেবে। তাই ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ “সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য ফোরাম”কে আহবান করছে যে, সচিবালয় ও সারা দেশের সরকারী অফিস অচল করার কর্মসূচি থেকে সরে এসে আলাপ-আলোচনার মধ্য দিয়ে সমাধান খুজে বের করুন। একই সাথে সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের প্রতিও আহবান জানাচ্ছে যে, উন্মুক্তচিন্তায় আলোচনার মধ্যে দিয়ে এর সমাধান খুঁজতে জরুরী ব্যবস্থা গ্রহণ করুন।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমীর বলেন, সরকারী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দক্ষতা-যোগ্যতা ও জবাবদিহিতা রাষ্ট্রের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। সরকারী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কাজের প্রতি দায়বদ্ধতা ও ফলাফলমূখি চরিত্র ধারণ করতে হবে। দুঃখের সাথে বলতে হয়, বাংলাদেশের সরকারী কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মধ্যে এগুলোর অভাব লক্ষনীয়। একবার কোনভাবে সরকারী চাকুরীতে প্রবেশ করলে তাকে আর কোন জবাবদিহি করতে হয় না। সরকারী দপ্তরে সেবা নিয়ে যাওয়া জনগণ এর ভুক্তভোগী। সেজন্য প্রস্তাবিত অধ্যাদেশে যেভাবে সংশোধন আনা হয়েছে তা ইতিবাচক চিন্তা থেকেই করা। তথাপিও এ ক্ষেত্রে যৌক্তিক কোন দ্বিমত থাকলে তার জন্য আলোচনার পথ খোলা আছে। রাজনৈতিক কর্মসূচির মতো করে সচিবালয় অবরুদ্ধ করা কোন আই্নসিদ্ধ পন্থা হতে পারে না। বরং এটা সরকারি চাকরির সাধারণ রীতিনীতি বহির্ভূত আচরণ যা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। আমি সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারিদের প্রতি আহবান করবো, দেশকে বিপদে ফেলে এমন কোন কর্মসূচিতে অংশ নেবেন না।
পীর সাহেব চরমোনাই বলেন, পতিত ফ্যাসিবাদ সচিবালয়কে ছিয়ানব্বই সালে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রনোদিত ব্যবহার করেছিলো। বর্তমানে দেশ একটি সংস্কার প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। ফ্যাসিবাদ ও ফ্যাসিবাদের অবশিষ্টাংশকে অপসারণ ও বিচারের কাজ চলছে। এই মূহুর্তে সচিবালয়ে যা হচ্ছে তাতে শংকিত হওয়ার কারণ আছে। আমরা বিশ্বাস করতে চাই, যারা সচিবালয় অবরুদ্ধ করেছেন তাদের কোন রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নাই। তথাপিও পতিত ফ্যাসিবাদ সুবিধা নিতে পারে এবং গণঅভ্যুত্থানের সরকার বিপদে পরে এমন সব কর্মসূচি প্রত্যাহার করতে হবে। কারণ, এর মাধ্যমে ফ্যাসিবাদ কোন ধরনের সুযোগ নিলে জনতা ও ইতিহাস কাউকে ক্ষমা করবে না।