৫৫/বি (৩য় তলা), পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০

ফোন : ০২-৯৫৬৭১৩০, ফ্যাক্স : ০২-৭১৬১০৮০

সিইসির বক্তব্যে পীর সাহেব চরমোনাই-র ক্ষোভ প্রকাশ

স্বাধীনতার ৫৫ তম দিবসেও জাতি নিরাপত্তা নিয়ে শংকিত; স্বাধীনতাকে অর্থবহ করতে আমাদের সংগ্রাম অব্যাহত রাখতে হবে
-পীর সাহেব চরমোনাই

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম, পীর সাহেব চরমোনাই বিজয় দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় বলেছেন, স্বাধীনতার ৫৫তম দিবসেও জাতি তার জান-মালের নিরাপত্তা নিয়ে শংকায় আছে। এর নাম স্বাধীনতা হতে পারে না। একাত্তরের আলোচনা আসলেই একাত্তরে কে কি করেছেন তার মহিমা ও কীর্তন শুরু হয়। একাত্তর সালে এবং বাংলার দীর্ঘ সংগ্রামে যারাই অংশ নিয়েছেন, জীবন দিয়েছেন তাদের প্রতি শ্রদ্ধা ও সন্মান আমরাও জানাই, সর্বদা জানিয়েই যাবো। একই সাথে তারা কেন জীবন উৎসর্গ করেছিলেন সেই আলোচনা না করলে তাদের ত্যাগকে অর্থ করা যায় না।

পীর সাহেব চরমোনাই বলেন,স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র অনুসারে একাত্তর সালে মানুষ যুদ্ধ করেছিলো, সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করার জন্য। আর একাত্তরের আগের ঘটনা প্রবাহ বিবেচনায় নিলে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়েছিলো, মানুষের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা করার জন্য। মুক্তিযুদ্ধের এই কারণ বিবেচনা করলে দেখা যায় আমাদের মুক্তিযুদ্ধ আদতে ব্যর্থ হয়েছে। হ্যা! আমরা আলাদা ভূখন্ড পেয়েছি, নিজস্ব পতাকা পেয়েছি। কিন্তু এগুলো স্বাধীনতা না; বরং এগুলো হলো স্বাধীনতার প্রতিক।

প্রকৃত স্বাধীনতা হলো, সমাজ থেকে আয় বৈষম্য দুর হওয়া, সুযোগের বৈষম্য দুর হওয়া, সন্মান ও মর্যাদার বৈষম্য দুর হওয়া। কিন্তু বাংলাদেশে তা হয় নাই।

আসল স্বাধীনতা হলো, মানুষের ওপরে অত্যাচার-নিপিড়ন বন্ধ হওয়া, খুন-গুম বন্ধ হওয়া, বিনাবিচারে আটক করা বা হত্যা করা বন্ধ হওয়া, সুবিচারের নিশ্চয়তা পাওয়া, খাদ্য, বস্ত্র, শিক্ষা, চিকিৎসা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত হওয়া-অর্থাৎ মানবিক মর্যাদা প্রতিষ্ঠা হওয়া। স্বাধীনতার ৫৪ বছরে সেটাও হয় নাই।

সত্যিকারের স্বাধীনতা হলো, সমাজে পারস্পরিক সৌহার্দপূর্ণ সহযোগীতামূলক পরিবেশ তৈরি হওয়া, পারস্পরিক আস্থা, সহনশীলতা ও সহমর্মীতাপূর্ণ সমাজ ও রাজনৈতিক সংস্কৃতি তৈরি হওয়া। বাংলাদেশে সেটাও হয় নাই।

তাহলে একাত্তর সালে এতো এতো রক্ত ও জীবন উৎসর্গ করে আমরা আসলে কি পেলাম। প্রতিকী স্বাধীনতা পেয়েছি বটে কিন্তু সেই স্বাধীনতা অর্থবহ হয় নাই।

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ একাত্তরের বিজয়কে অর্থবহ করার সংগ্রাম অব্যাহত রাখবে ইনশাআল্লাহ।

পীর সাহেব চরমোনাই বলেন, ২৪ এর জুলাই আগস্ট আমাদের জন্য আরেকটি সুযোগ তৈরি করেছে। ৫৪ বছরের জমা হওয়া জঞ্জাল দুর করে দেশকে নতুনভাবে গড়ে তোলার আরেকটি সুযোগ এসেছে। স্বাধীনতাকে অর্থবহ করার সম্ভবনা তৈরি হয়েছে। সেই সম্ভাবনা আমাদের কাজে লাগাতে হবে। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ সরকার গঠন করার সুযোগ পেলে সমাজ থেকে আয় বৈষম্য, সুযোগের বৈষম্য ও সন্মানের বৈষম্য দুর করা হবে। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করা হবে, ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করা হবে। মানুষের ওপরে নির্যাতন-নিপিড়ন সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করা হবে। খুন-গুম, বিনাবিচারে হত্যা বন্ধ করা হবে। সমাজকে পারস্পরিক সহযোগীতাপূর্ণ ও সৌহার্দ্যময় করে তোলা হবে। রাজনৈতিক সংস্কৃতি হবে সৌজন্যতামূলক।

পীর সাহেব চরমোনাই ১৬ ডিসেম্বর নিয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর স্টাটাসের সমালোচনা করে বলেন, তিনি প্রকারন্তরে বাংলাদেশের স্বাধীনতাকেও অস্বীকার করতে চান। তার এবং ভারতের এমন মনোভাব ভুল ও নিন্দনীয়। তিনি বলেন, আমাদের প্রতিবেশিদের সাথে আমাদের সম্পর্ক হবে পারস্পরিক সহযোগীতা ও সন্মানের । কিন্তু কেউ যদি তাদের ভূখন্ডে বাংলাদেশ বিরোধী কাউকে আশ্রয় দেয়, তাদের মাটিতে বসে বাংলাদেশ বিরোধী চক্রান্ত করতে দেয় তাহলে মনে রাখতে হবে, বাংলাদেশের মানুষের রক্ত আধিপত্যবাদ বিরোধী। আমাদের সাথে শত্রুতা করলে আমরা আমাদের জাতভাইদেরও ছাড় দেই নাই। বিষয়টি সবাইকে মাথায় রাখতে হবে।

পীর সাহেব চরমোনাই ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় প্রধান নির্বাচন কমিশনারের বক্তব্যে ধিক্কার জানিয়ে বলেন, কোন সাধারণ জ্ঞান সম্পন্ন মানুষ এই ধরণের বক্তব্য দিতে পারে না।

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ঢাকা মহানগরের সভাপতি ও দলের যুগ্মমহাসচিব মাওলানা শেখ ফজলে বারী মাসউদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন দলের মহাসচিব অধ্যক্ষ মাওলানা ইউনুস আহমদ, বিশেষ বক্তা হিসেবে ছিলেন, ঢাকা দক্ষিণের সভাপতি ও দলের যুগ্মমহাসচিব মাওলানা ইমতেয়াজ আলম। উপস্থিত ছিলেন, কেন্দ্রীয় ও মহানগর নেতৃবৃন্দ।

 

শেয়ার করুন

অন্যান্য জাতীয় কর্মসূচি

Scroll to Top

সদস্য ফরম

নিচের ফরমটি পূরণ করে প্রাথমিক সদস্য হোন

small_c_popup.png

প্রশ্ন করার জন্য নিচের ফরমটি পূরণ করে পাঠিয়ে দিন