ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম, পীর সাহেব চরমোনাই আজ ২৯ মে বৃহস্পতিবার বগুড়ার ধুনট শহীদ মিনার চত্তরে আয়োজিত এক গণসমাবেশে বলেছেন, দেশের রাজনৈতিক দলগুলো এখন দুইভাবে বিভক্ত হয়েছে। দেশপ্রেমিক ও ক্ষমতাপ্রেমিক। দেশপ্রেমিকরা সংস্কার, বিচার ও নির্বাচন চাইছে। আর ক্ষমতাপ্রেমীরা দ্রুত নির্বাচন চাইছে। বাংলাদেশে দ্রুত নির্বাচন আয়োজনের জন্য ভারতীয়রাও আগ্রহী। আমাদের দেশের কিছু দলও আগ্রহী। ভারতীয়দের সাথে এদের আগ্রহ মিলে যাওয়ায় আমরা শংকিত।
পীর সাহেব চরমোনাই হুশিয়ারী উচ্চারণ করে বলেন, ভারতীয়দের কোন চাওয়া ও প্রত্যাশা বাংলাদেশে বাস্তবায়ন করতে দেয়া হবে না। তিনি বলেন, যারা নির্বাচন নির্বাচন করছে তাদের অতিত আমরা জানি। বাংলাদেশকে দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ান এদের নেতৃত্বেই হয়েছিলো। জুলাই অভ্যুত্থানের পরে সেই সুযোগ আর কাউকে দেয়া হবে না।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমীর বলেন, পতিত স্বৈরাচারের লোক প্রশাসনসহ সর্বত্র ঘাপটি মেরে আছে। তারা সুযোগ খুঁজছে। এরা অন্তর্বর্তী সরকারকে কাজ করতে দিচ্ছে না। অন্তর্বর্তী সরকারের কাজ সংস্কার, বিচার ও নির্বাচন আয়োজন করা। সেই কাজে প্রত্যাশা পূরণ না হলেও তারা সংস্কার ও বিচারের কাজে এগিয়ে নিচ্ছে। এখানে কোন অবহেলা হলে আমরা প্রতিবাদ করবো কিন্তু নির্বাচন নির্বাচন করে দেশকে অস্থিতিশীল করার কোন অর্থ হয় না।
জুলাই হত্যাকান্ডের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি, সংখ্যানুপাতিক (PR) পদ্ধতিতে জাতীয় সংসদ নির্বাচন, বিতর্কিত নারী সংস্কার কমিশন বাতিল ও ইসলামী হুকুমত কায়েমের লক্ষ্যে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, ধুনট উপজেলা শাখার উদ্যোগেমুফতী শাহাদত হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত গণসমাবেশে পীর সাহেব চরমোনাই বলেন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ আগামীর সুন্দর ও সাম্য, মানবিক মর্যাদা এবং সামাজিক ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠায় আপনাদের সমর্থন ও সহযোগীতা চায়। আগামী নির্বাচনে ইসলামকে ক্ষমতায় নিতে ঐক্যবদ্ধ হোন।
সমাবেশে বিশেষ অতিথি ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ—এর নায়েবে আমীর আল্লামা আব্দুল হক আজাদ বলেন, রাজনীতি এখন পূঁজি বিহীন লাভজনক ব্যবসায় পরিনত হয়েছে। এ কারণে ৫৪ বছরে ক্ষমতার পালাবদল হওয়া সত্তে¦ও দেশ এবং জনগণের কাঙ্খিত মুক্তি অর্জনস হয়নি। তিনি আরো বলেন, মানব রচিত আইন দিয়ে দেশ পরিচালিত হলে দেশে ইনসাফ ও ন্যায় নীতি প্রতিষ্ঠা হবে না। গ্রাম অঞ্চলে প্রান্তিক কৃষক ব্যাংক থেকে ৫০০০ টাকা লোন নিয়ে সঠিক সময়ে পরিশোধ করতে না পারলে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করে জেলে পাঠানো হয়। অথচ হাজারো লক্ষ কোটি টাকা লোন নিয়ে ঋণ খেলাফি হলেও তাদেরকে আইন স্পর্শ করে না। সুতরাং ইসলামী আইন প্রতিষ্ঠা ছাড়া দেশের উন্নয়ন ও মানুষের সঠিক নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে না। সমাবেশে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের যুগ্মমহাসচিব ইঞ্জিনিয়ার আশরাফুল আলম প্রমূখ।