বিতর্কিত পার্লামেন্ট ভেঙ্গে দিয়ে জাতীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন দিন
সরকার রাষ্ট্রের সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংস করে দিয়েছে নিজেদের স্বার্থে -ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসচিব প্রিন্সিপাল হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ বলেছেন, সরকার হয় দলীয় এবং পরিবর্তনশীল। আর রাষ্ট্র হয় সকলের এবং তা অপরিবর্তনশীল। সরকার আসে-যায় কিন্তু রাষ্ট্র ক্রমান্বয়ে এগিয়ে যায়। রাষ্ট্র একগুচ্ছ প্রতিষ্ঠান ও বিভিন্ন শক্তিকেন্দ্র নিয়ে গড়ে ওঠে। সরকার সেসব প্রতিষ্ঠান ও শক্তিকেন্দ্র ব্যবহার করে কাজ করে। দুঃখজনক বাস্তবতা হলো, বাংলাদেশের সকল রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান ও শক্তিকেন্দ্রগুলোকে নানাভাবে ধ্বংস করা হয়েছে। পুলিশ-র্যাব-আনসার, আধা সামরিক বাহিনী, বিজেবি, সামরিক বাহিনী, কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে শুরু করে রাষ্ট্রের প্রতিটি প্রতিষ্ঠানকে কত নির্মমভাবে ধ্বংস করা হয়েছে তা বলাবাহুল্য। ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের নেতৃত্বের দলীয় আনুগত্য, পেশাজীবি সংগঠনের লেজুরবৃত্তি, মিডিয়ার একাংশের অপতৎপরতা এবং বুদ্ধিজীবীদের একাংশের আচরন বিস্তারিত বিবরণ দেয়া বাহুল্য হবে। এর ফলশ্রুতিতে রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশ ফাংশন করতে ব্যর্থ হচ্ছে। দুর্নীতি, মুদ্রার মান নিয়ন্ত্রণ, মুদ্রাস্ফীতি ও দ্রব্যমূল্য নির্ধারণ, ঋণখেলাফি, টাকা পাচার ইত্যাদি ক্ষেত্রে সরকারের চরম অযোগ্যতা ও ব্যর্থতার প্রমাণ পাওয়া যায়। এ সকল ব্যর্থতার দায় নিয়ে সরকারের আগেই পদত্যাগ করা উচিত ছিল। কিন্তু সরকার তা না করে, যেকোন উপায়ে পুনরায় ক্ষমতায় থাকতে চায়। এটা সরকারের চরম নিলর্জ্জতা ও ফ্যাসিবাদী চরিত্রের নগ্ন বহিঃপ্রকাশ ছাড়া আর কিছুই নয়।
মহাসচিব মাওলানা ইউনুছ আহমাদ বলেন, এই সঙ্কট নিরসনে ইসলামী আন্দোলনের আমীর হযরত পীর সাহেব যে তিন দফা প্রস্তাবনা পেশ করেছেন, তা মেনে নিলে রাষ্ট্রের আর কোন সমস্যা থাকার কথা নয়। প্রস্তাবনাগুলোর মধ্যে রয়েছে :
১. বিতর্কিত নির্বাচন কমিশন কর্তৃক ঘোষিত একতরফা তফসিল বাতিল করে গ্রেফতারকৃত বিরোধী দলীয় রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের মুক্তি দিয়ে নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ তৈরী করতে হবে।
২. বর্তমান বিতর্কিত পার্লামেন্ট ভেঙ্গে দিয়ে জাতীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে হবে।
৩. কার্যকরী সংসদ, রাজনৈতিক সংহতি এবং শতভাগ জনমতের প্রতিফলনের জন্যপিআর (চজ)বা সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতির নির্বাচন’ই অধিকতর উত্তম পদ্ধতি; যা বিশ্বে স্বীকৃতি লাভ করেছে তা প্রবর্তন করতে হবে।
আজ বুধবার বিকেলে পুরানা পল্টনস্থ দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দেশের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষের সাথে আলোচনাকালে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ছিলের প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান, সহকারি মহাসচিব মাওলানা মুহাম্মদ ইমতিয়াজ আলম, প্রচার ও দাওয়াহ বিষয়ক সম্পাদক মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ূম, সাংগঠনিক সম্পাদক (ঢাকা বিভাগ) অধ্যাপক সৈয়দ বেলায়েত হোসেন, আলহাজ্ব হারুন অর রশিদ।